শ্রয়ণ সেন
“ডা. এএন গুহা
লেট সিনিয়র হাউজ ফিজিশিয়ান
মেডিক্যাল কলেজ কলকাতা”৷
ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পড়ে রয়েছে বাড়িটা। গেটের সামনে আগাছার স্তূপ। কিছুক্ষণ আগেই আরও একটা বাড়ি দেখলাম। পরিষ্কার বাংলায় লেখা রয়েছে, “বিহারী বাবুর বাংলো৷” তার অবস্থা অবশ্য কিছুটা ভাল। তবে বাড়িটা জবরদখল হয়ে গেছে কি না সেটা বোঝা গেল না।
“টিলা টিলা শিমুলতলায় ভিলা ভিলা বাড়ি…” কথাটা কতোই শোনা। সেই শিমুলতলাকে নিজের চোখে দেখতে, বাঙালির পশ্চিম তথা “ড্যাঞ্চি বাবুর দেশ” নিজের চোখে দেখতে আজ সকালেই পৌঁছালাম বিহারের সিমলা তথা শিমুলতলায়। মোকামা প্যাসেঞ্জারের স্লিপার ক্লাসে বর্ণময় এক অভিজ্ঞতার শেষে শিমুলতলা স্টেশনে যখন নামলাম, তখন ভোরের আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠেছে সে। স্টেশন চত্বরেই বসেছে হাট, দৈনন্দিন বাজারে ব্যস্ত লোকজন।
একটু দূরে পসরা সাজিয়ে বসেছেন গুপ্তাজি। তাঁর গুপ্তা সুইটস শিমুলতলার বিখ্যাত মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। এখানকার ছানার মুড়কি, জিলিপির স্বাদ শিমুলতলার গণ্ডি ছাড়িয়ে সুদূর কলকাতাতেও পৌঁছে গেছে। তবুও চারিদিকে অপার নিস্তব্ধতা। শহুরে কোনও কোলাহল নেই। সেই নির্জনতা ভেদ করে দেয় ৬টা অটোরিক্সার ভটভট আওয়াজ। তাতে চেপেই পৌঁছে যাই আমাদের শিমুলতলা যাপনের আস্তানায়।
প্রাতরাশের এখনও একটু দেরি। তাই স্নান করে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়ি। আমাদের হোটেল থেকে স্টেশনের পথে রাস্তার দু’ধারেই রয়েছে একাধিক ভিলা। সেগুলোর সঙ্গেই একটু পরিচিত হওয়ার উদ্দেশ্য।
শিমুলতলা স্টেশনে নামা ইস্তক চারিদিকে বাংলায় কথাই শুনছি। হোটেলকর্মী, অটোচালক সবাই বাংলা বলছেন। এমনকী, শিমুলতলা থানার যে বোর্ডটা চোখে পড়ল সেখানেও বাংলা লেখা। এটা গর্বের বিষয় বইকি!
এখানে আসার আগে অনাথবন্ধু চট্টোপাধ্যায়ের “ছুটির নিমন্ত্রণে” বইটা পড়েছি। শিমুলতলা এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের সঙ্গে বাঙালির কি সম্পর্ক, সেটার ব্যাপারে ওই বই থেকেই ধারণা করেছি। জায়গাটা ভৌগোলিকভাবে বিহারের অন্তর্গত হলেও এক কালে ছিল অবিভক্ত বাংলার অংশ, সাঁওতাল পরগনা। এখানে উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ বলতে আদিবাসী কোল, ভীল এবং সাঁওতাল। সরল অভাবী জীবন তাদের। মালভূমির গর্ভ খনিজ সম্পদে ঠাসা হলেও তারা সেসব খবর রাখত না। তারা বুঝতও না এই অঞ্চলের জল-হাওয়ার গুণ। জল যেমন সুস্বাদু, তেমনই পেটের পক্ষে চরম উপযোগী, আর হাওয়া যেমন সুশীতল, তেমনই স্বাস্থ্যকর। আরও পড়ুন-Susanna anna maria varkark: চুঁচুড়ার ওলন্দাজ ইতিহাসের স্মারক সুস্যানা আন্না মারিয়ার ভারকার্কের সমাধি
একদিন বাঙালি পেল তারই সন্ধান। ১৮৭১ সালে এই সাঁওতাল পরগনায় প্রথম বাঙালি হিসেবে পা রাখলেন হুগলি জেলার বিজয় নারায়ণ কুণ্ডু। মধুপুর-গিরিডি শাখার রেললাইন পাতার ঠিকাদারি নিয়ে এলেন এখানে। তাঁর সেই কাজের মেয়াদ একদিন ফুরিয়ে এল। কিন্তু বিজয় নারায়ণ আবিষ্কার করলেন তাঁর পেটের দুরারোগ্য পুরোনো আমাশয় রোগ এখানকার জলের গুণে পুরোপুরি ঠিক হয়ে গেছে।
তাই তিনি মধুপুরে নিজের বাড়ি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই থেকে বাঙালির এই পশ্চিমে আগমন শুরু। তাঁরা এলেন দেখলেন এবং গড়ে তুললেন নিজেদের মনের মতো স্বাস্থ্যনিবাস পাড়া।
আসানসোলের কাছে রূপনারায়ণ পুর থেকে শুরু করে শিমুলতলা হয়ে ঝাঝা, আবার অন্যদিকে দুমকা-গিরিডি পর্যন্ত ছিল এই বাঙালি স্বাস্থ্যনিবাসের পরিধি৷ যার আয়তন ৫ হাজার ৪৭০ বর্গমাইল। এখানে আসতে আসতেই বাঙালিদের কপালে জুটল ‘ড্যাঞ্চিবাবু’ উপাধি।
স্বাস্থ্যবদল করতে আসা বাঙালিরা এইসব অঞ্চলের হাটে তাজা শাকসবজি, মাছ, মাংস কিনতে গিয়ে সেসবের ক্রয়মূল্য শুনে অবাক হয়ে যেতেন। কলকাতার তুলনায় অনেক সস্তা, সেকারণে বাজার করতে এসে স্বাস্থ্য উদ্ধারে আসা বাঙালিবাবু ইংরেজিতে বলে উঠতেন “ড্যাম চিপ৷” আরও পড়ুন-Bansberia: চলুন যাই দেখে আসি, বাঁশবেড়িয়ার ৩৪১ বছরের অনন্ত বাসুদেব মন্দির
বাজারে এইসব বাঙালিবাবুর মুখে নিয়মিত “ড্যাম চিপ” শব্দবন্ধ শুনে শুনে সেখানকার আদিবাসী মানুষজন এঁদের নাম দিয়েছিল ড্যাঞ্চি বাবু। ‘ড্যাঞ্চি’ কথাটা আদতে ওই “ড্যাম চিপ” কথারই অপভ্রংশ।
তখন ব্রিটিশ আমল। বাঙালি নিয়েছে ভারতকে স্বাধীন করার ব্রত। ব্রিটিশ সরকার দেখল বাঙালিকে এবার টুকরো টুকরো করে ফেলতে হবে। দেশের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে চলে গেল। ১৯১২ সালে বাংলাকে দু’ফালা করা হল। সাঁওতাল পরগনা চলে গেল বিহারে। বাঙালি কার্যত নিজভূমে পরবাসী হয়ে গেল।
ঝাঝা-শিমুলতলা চলে গেল মুঙ্গের জেলায়, এখন যদিও জামুই জেলার অন্তর্গত। গিরিডি চলে গেল হাজারিবাগ জেলায়৷ এখন অবশ্য গিরিডি নিজেই স্বতন্ত্র জেলা। আজ থেকে ২১ বছর আগে অবশ্য সেই বিহারও দু’টুকরো হল। ঝাঝা-শিমুলতলা থেকে গেল বিহারে, মধুপুর-গিরিডি গেল ঝাড়খণ্ডে। আরও পড়ুন-মা কাঁদছেন, বিসর্জনের সুর ছুঁয়ে যায় অভাগী মেয়ের আত্মকথন…
তবে বাংলা ভাগ হলেও প্রকৃতির অফুরান দাক্ষিণ্যের প্রসাদ থেকে বঞ্চিত হল না বাঙালির স্বাস্থ্য-উপনিবেশ। হাওয়া এবং স্বাস্থ্যবদলই ছিল তাঁদের এ অঞ্চলে আসার উদ্দেশ্য। তবে গিরিডি, মধুপুরের থেকে শিমুলতলা অনেক বেশি ফাঁকা হওয়ার কারণে এখানে বাঙালির নজর বেশি করে পড়ল। তাই ধীরে ধীরে একের পর এক ভিলা গড়ে উঠল শিমুলতলায়।
তবে বেশিরভাগ বাড়ি দেখলেই ভীষণ মন খারাপ হয়ে যায়। তখনকার দিনে কত যত্ন নিয়ে বাড়িগুলো তৈরি করা হয়েছিল। আজ তাদের বেশিরভাগই ভেঙে পড়েছে। অনেক বাড়ির গেটে এখনও বাংলায় লেখা ফলক বর্তমান। তবে ভিতরে ঢুকলে তাদের করুণ অবস্থা বেশ বোঝা যায়। বেশিরভাগ বাড়িই দখলদারদের কবলে। যদিও কয়েকটা বাড়িকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। এগুলো হোমস্টে বা লজ হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়।
রাস্তায় কিছুক্ষণ চক্কর কেটে ফিরে আসি রিসর্টে। পরোটা, অতি সুস্বাদু আলুর দম আর গুপ্তা সুইটসের গরম গরম জিলিপি সহযোগে দুর্দান্ত প্রাতরাশ সেরে বেরিয়ে পড়ি ধারারা ফলসের উদ্দেশে। এই সব অঞ্চল অতিপ্রাচীন গন্ডোয়ানা ল্যান্ডের অংশ। প্রায় সাড়ে বারো কোটি বছর আগে মাটির নিচে দুই টেকটনিক পাতের প্রবল সংঘর্ষে জন্ম নেয় এবড়ো খেবড়ো ছোটোনাগপুর মালভূমি।
সে কারণে চারপাশে তাকালেই চোখে পড়ে অনুচ্চ টিলা, ছোট-বড়ো পাহাড় শ্রেণি। এই অঞ্চলের গড় উচ্চতা মোটামুটি সাতশো-আটশো ফুট। রাস্তা মোটের উপর সমতল মনে হলেও পাহাড়ি পাহাড়ি ব্যাপার চারিদিকে। বর্ষার কারণে চারদিকটা আরও যেন সবুজ হয়ে উঠেছে। টিলার উপরে ছোট্ট একটা মন্দির। মন্দিরের সামনেই থামল আমাদের গাড়ি। রিসর্ট থেকে মোটামুটি আধঘণ্টা লাগল সেখানে পৌঁছাতে। মন্দিরের পিছনদিক দিয়ে নেমে গেছে বিস্তীর্ণ নদীখাত। নিচেই দেখা যাচ্ছে তাকে, অর্থাৎধারারাকে।
ধারারা আদৌ কোনও জলপ্রপাত নয়। ছোটোনাগপুর মালভূমির খাঁজ বরাবর চলতে গিয়ে এক অপূর্ব উপত্যকার সৃষ্টি করেছে টেলওয়া নদী। অন্যসময় হয়তো জল বিশেষ থাকে না। কিন্তু এখন বর্ষায় তার উচ্ছল রূপের দেখা পেলাম। অজস্র বড় বড় পাথরের মাঝখান দিয়ে চলার সময় এক দেড় ফুটের ছোট ছোট অনেকগুলো প্রপাত মিলে তৈরি এই ধারারা। আডভেঞ্চারের নেশায় এ পাথর ও পাথর টপকে এগিয়ে চলেছি। তবে সতর্ক থাকতে হচ্ছে সবসময়। পা কোনওভাবে হড়কে গেলে বিপদ অবশ্যম্ভাবী। আরও পড়ুন-কাশের বনে লাগল দোলা, উমা আসে বাপের বাড়ি…
ধারারা দেখে উঠে পড়ি গাড়িতে। এবার গন্তব্য শিমুলতলার আরও এক দ্রষ্টব্য হলদি ঝরনা। কিন্তু বিধি বাম। বর্ষার ফলে হলদি ঝরনায় যাওয়ার রাস্তা হাঁটারও অযোগ্য হয়ে উঠেছে। পাহাড়ও অরণ্যের সহাবস্থানে মনোরম পরিবেশে বয়ে চলা এই হলদি ঝরনার দর্শন না পেয়ে মন যেন কিছুটা হতাশ। ফিরে আসি রিসর্টে। এবার মধ্যাহ্ন ভোজনের পালা। আবার সুস্বাদু সব রান্নাবান্না। ভাত, ডাল, তরকারির সঙ্গে জোড়ামাছ। ভরপেট খেয়েদেয়ে দুপুরের বিশ্রামের জন্য গা এলিয়ে দিই বিছানায়। সাড়ে চারটেয় ফের রওনা। এবার গন্তব্য শিমুলতলার দুই অত্যন্ত পরিচিত স্থান- রাজবাড়ি এবং লাট্টুপাহাড়।
স্টেশনের দিকে কিছুটা গিয়ে, বাঁদিকের মোরামের রাস্তায় উঠলাম। তবে তার একটু আগেই চোখে পড়ল শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ। শিমুলতলার ৫৬২টা বাড়ির মতো এই বাড়িটাও অতি প্রাচীন। স্বয়ং স্বামীজি এসে থেকে গেছেন এই বাড়িতে। স্বামীজির পত্রাবলীতে এই বাড়িটির উল্লেখ পাওয়া যায়। আরও পড়ুন-Shankha Ghosh:“আমার বলে রইল শুধু, বুকের ভিতর মস্ত ধু ধু”
কাশীর জমিদার, শ্রীরামকৃষ্ণ-ভক্ত প্রমদা দাস মিত্রকে ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের ৪জুলাই বাগবাজার মঠ থেকে স্বামীজি লিখেছিলেন, “…আমার পূর্ব অবস্থার কোন আত্মীয় সিমুলতলায় (বৈদ্যনাথের নিকট) একটি বাংলো (bungalow) ক্রয় করিয়াছেন। ঐ স্থানের জলবায়ু স্বাস্থ্যকর বিধায় আমি সে স্থানে কিছুদিন ছিলাম। কিন্তু গ্রীষ্মের আতিশয্যে অত্যন্ত উদরাময় হওয়ায় পলাইয়া আসিলাম।…”
লাট্টু পাহাড়ের দিকে একটু এগোতেই বাঁদিকে পড়ল সেকালের ‘হাউস অব লর্ডস’ অর্থাৎ লর্ড সত্যেন্দ্র প্রসন্ন সিনহার বাড়ি। ওঁর নামেই আজও কলকাতায় রয়েছে লর্ড সিনহা রোড। এরপর একটু এগোলেই ডানদিকে পরপর আরও বহু নামজাদা বাঙালির বাড়ি। প্রাক্তন বিচারপতি শ্যামল সেনের বাড়িটা এখনও বেশ নজর কাড়া। বাঁদিকে পড়ল ‘পালভিলা।’ তরুণ মজুমদারের ‘দাদারকীর্তি’র শুটিং হয়েছিল এই বাড়িতেই৷
উঁচু-নিচু পথ পেরিয়ে, লাট্টু পাহাড় চত্বরে যখন পৌঁছালাম তখন দিনাবসানের পালা। সূর্য প্রায় হেলে পড়েছে পশ্চিমে। আমরা প্রথমে দাঁড়ালাম রাজবাড়ির সামনে।
বাংলা সিনেমার দৌলতে, বিশেষ করে বছর দুয়েক আগে মুক্তি পাওয়া “দুর্গেশ গড়ের গুপ্তধন”-এর সৌজন্যে বাড়িটির সঙ্গে এখন অনেক বাঙালিই পরিচিত। আশ্চর্য সুন্দর এই রাজবাড়ির স্থাপত্য। চার কোণে চারটে মিনার আর মাঝখানে মূল কাঠামো। সামনে পিছনে দু’দিকেই মাঝ বরাবর দোতলায় উঠে গেছে রাজকীয় এক সিঁড়ি। যশোরের নলডাঙার জমিদার প্রমথ ভূষণ দেব রায়ের বাড়ি ছিল এটি। বাড়িটি কবে তৈরি, সে ব্যাপারে বিস্তারিত কোনও তথ্য না থাকলে ও প্রমথ ভূষণের জন্ম যেহেতু ১৮৫৮ সালে, তাই এই বাড়ির বয়স একশোর বেশি যে হবে, তা বলাই বাহুল্য।
তবে বাড়িটার ভগ্নদশা মন খারাপ করে দেয়। সমস্ত জানলা দরজা কড়িকাঠ চুরি হয়ে গেছে। ছাদ ভেঙে পড়েছে। এই রাজবাড়ির সঙ্গেই জড়িয়ে আছে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের বেশকিছু অধ্যায়। এক সময় এই বাড়িতে যাতায়াত ছিল পণ্ডিত মতিলাল নেহরুর। বিপ্লবীদের সঙ্গেমিটিং করতেন তিনি। এখানে বসেই ঠিক হয়েছে বিভিন্ন আন্দোলনে ররূপরেখা। এই রকম ঐতিহাসিক বাড়ির ভগ্ন অবস্থা খুবই দুঃখের। আরও পড়ুন-Kashmir: কাশ্মীর! এক বিভাজিত আখ্যান (দ্বিতীয় পর্ব)
রাজবাড়ির সিঁড়িতে বসে বাঁদিকে, অর্থাৎ পূর্ব দিকে তাকালে বিশাল সরোবর দেখা যায়। সামনেই রয়েছে লাট্টু পাহাড়। দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছে ঠিক যেন একটা খেলনা লাট্টু দাঁড়িয়ে আছে। লাট্টু পাহাড়ের উচ্চতা সমুদ্রতল থেকে এক হাজার ফুট। অর্থাৎ শিমুলতলার সমতল থেকে শ’তিনেক ফুট উঁচু। ছোট্ট একটা ট্রেকিং সেরে উঠে গেলাম পাহাড়ের মাথায়। খুব সহজ ট্রেকিং, যে কেউ এটা করতে পারেন।
পাহাড়ের মাথায় রয়েছে আদিবাসী দেবতার থান। উপর থেকে গোটা সমতল শিমুলতলাকে এক কথায় অসামান্য লাগছে। দক্ষিণ দিক থেকে বয়ে আসা ফুরফুরে শীতল বাতাস সব কষ্ট দূর করে দিচ্ছে। অসাধারণ একটা সূর্যাস্ত প্রত্যক্ষ করলাম।
শিমুলতলায় দিন যাপনের শেষে আমিও টের পেলাম তার জল-হাওয়ার গুণ। ২৪ঘণ্টা কাটল না, অথচ আমার স্বাস্থ্য বদল হয়ে গেল। হাওড়া থেকে কাল যখন ট্রেনে উঠেছিলাম, ফ্যারেনজাইটিস কাবু করেছে আমায়। ঘনঘন কাশি হচ্ছে। আর আজ সারাদিন শিমুলতলা ঘুরে, এখন লাট্টু পাহাড়ের ওপরে খেয়াল হল কাশি আমার উধাও। বাঙালি কেন স্বাস্থ্য বদলের জন্য শিমুলতলা-গিরিডি-মধুপুরে আসত, তার হাতেনাতে প্রমাণ পেয়ে গেলাম।