জাপানে একটা ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। দু’টুকরো হয়ে গেছে “কিলিং স্টোন”। এই “কিলিং স্টোন” (Killing Stone Broke) আসলে জমাট বাঁধা আগ্নেয় শিলা। আক্ষরিক অর্থে ঘটনাটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব অর্থবহ হলেও ব্যবহারিক অর্থে অর্থাৎ মানুষের বিশ্বাসের জায়গায় এই ঘটনা দুর্ঘটনা হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। কারণ মনে করা হয়, প্রায় ১ হাজার বছর ধরে এই “কিলিং স্টোন”-এ বন্দি হয়ে আছে নয় লেজ বিশিষ্ট এক ধূর্ত শেয়ালের অশুভ আত্মা। একে বলা হয় সেশো সেকি। ১৯৫৭ সালে এই আগ্নেয়শিলাটিকে ঐতিহাাসিক স্বীকৃতি দেয় সেদেশের সরকার। জাপানের নাসু আগ্নেয় গিরির কাছে থাকা এই সেশো সেকি-কে দেখতে দলে দলে পর্যটক আসেন।
জাপানের পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, এই “কিলিং স্টোন”-এর (Killing Stone Broke) কাছাকাছি এলে মৃত্যু অবধারিত। জাপান সম্রাট তোবাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল এক সামন্ত প্রভু। তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে সেই শেয়াল। সুন্দরী তরুণীর রূপ ধারণ করে সে, যার নাম তামামো-নো-মায়ে। তবে শেষমেশ শেয়ালের ইচ্ছে পূরণ হয়নি। বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা সামন্ত প্রভুর ষড়যন্ত্র টের পেয়ে ছদ্মবেশী শেয়ালকে জ্বলন্ত লাভায় বন্দি করে ফেলে। পরে ঠান্ডা হয়ে গেলে সেই বিরাট আগ্নেয়শিলাকে ভাগ করে গোটা জাপানে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
Here are some traditional depictions of the nine-tailed fox demoness Tamamo-no-Mae: pic.twitter.com/0L5qifniHu
— Nick Kapur (@nick_kapur) March 6, 2022
যার একটি অংশ পড়ে রাজধানী টোকিওর নিকটবর্তী নাসু শহরে। নাসু আগ্নেয় গিরির কাছে এই সেশো সেকি পড়েছিল। যাকে “কিলিং স্টোন” (Killing Stone Broke) হিসেবে অভিহিত করা হয়। জাপানের প্রায় সবাই জানেন, এই শিলার সংস্পর্শে এলে বেঁচে থাকা অসম্ভব।
Ukraine Russia War: ধ্বংসের মাঝেও অমলিন ভালবাসা, ইউক্রেন থেকে বন্ধুর পোষ্যকে নিয়ে দেশে ফিরলেন জাহিদ Bangla Magazine – % (bongmag.com)
তবে রবিবার সেই ভয়ঙ্কর ঘটনাটিই ঘটেছে। পর্যটকরা সেশো সেকি পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন সেটি দু’টুকরো হয়ে গেছে। “কিলিং স্টোন” ভেঙে যাওয়ার অর্থ হল তার ভিতরে হাজার বছর ধরে বন্দি থাকা অশুভ আত্মার মুক্তি পাওয়া। যে অশুভ আত্মা যেকোনও মুহূর্তে মানবজাতির বিরাট ক্ষতির কারণ হতে পারে।
এদিকে “কিলিং স্টোনে”র (Killing Stone Broke) ভঙ্গুর দশা দেখে আতঙ্কিত পর্যটকরা তৎক্ষণাৎ ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে থাকেন। একজন ক্যাপশনে লিখেছেন, “যা দেখলাম তা না দেখলেই ভাল হত, এমনটাই মনে হল।” কেউ বলছেন এটি ভাঙার নেপথ্যে রয়েছে কোনও ষড়যন্ত্র। এবার জাপানের উপরে বড়সড় বিপদ আসতে চলেছে।
九尾の狐の伝説が残る、殺生石にひとりでやってきました。
縄でぐるっと巻かれた真ん中の大きな岩がそれ…
のはずなのですが、なんと岩は真っ二つに割れて、縄も外れていました。
漫画だったらまさに封印が解かれて九尾の狐に取り憑かれるパターンで、見てはいけないものを見てしまった気がします。 pic.twitter.com/wwkb0lGOM9
— Lillian (@Lily0727K) March 5, 2022
যদিও নাসু প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, “কিলিং স্টোনে” (Killing Stone Broke) ফাটল ধরেছিল। এবার জাপানে অতিরিক্ত ঠান্ডা পড়েছে সেজন্য হয়তো সেই ফাটল বড় হয়ে সেশো সেকি ভেঙে পড়েছে। কেউ বলেছেন, প্রাকৃতিক জিনিস প্রকৃতির নিয়মেই ভেঙেছে। তবে নাসু শহরের ঐতিহাসিক গুরুত্বের সঙ্গে “কিলিং স্টোনে”র যোগসূত্র রয়েছে। তাই এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জার।
Kashmir: কাশ্মীর! এক বিভাজিত আখ্যান (চতুর্থ পর্ব)
এমনিতে “কিলিং স্টোন” দর্শনে কম পর্যটক নাসুতে আসেন না। তাই আগ্নেয়শিলার স্বাস্থ্য অক্ষুণ্ণ রাখতে দড়ি দিয়ে তাকে ঘিরে রাখা হয়েছিল। তবে এখন ঘটনাস্থলে গেলে দেখা যাবে দড়ি আলগা হয়ে একপাশে পড়ে আছে। আর সাধের সেশো সেকি কিনা এখন দু’ভাগে ভাগ হয়ে গেছে।