বিশ্ব তামাক দিবস ২০২০, (Tobacco Day 2020) ধুমপান (Smoking) স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। সিগারেটের প্যাকেটের সাবধান বাণী উপেক্ষা করেই তার বিক্রি বাড়ছে হু হু করে। সুখটানেই সুখ খুঁজে নেয় মানুষ। কিন্তু এই সুখ যে কত বড় অসুখ, তা জেনেও নিজেকে বদলানোর চেষ্টা তেমন করে না। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে তামাকজাত দ্রব্য গুলির ব্যবহার সীমাহীন ভাবে বেড়েছে। তরুণ প্রজন্ম থেকে একবারে বৃদ্ধ, তামাকের নেশায় সবাই যেন কেমন বুঁদ হয়ে আছে। আর সেই নেশায় বিশ্বে প্রায় ১.৩৩৭ বিলিয়ন তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহারে আকৃষ্ট যা তাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ। এর জেরে প্রতি বছর প্রাণ হারাচ্ছে প্রায় ৮ মিলিয়ন মানুষ|
ভারতে তামাক ব্যবহারকারীর (Tobacco Day 2020) সংখ্যাটা প্রায় ২৬৭ মিলিয়ন। এদেশে তামাকের নেশায় প্রাণ গিয়েছে ১.৩ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের। ধূমপায়ীরাই যে কেবল আক্রান্ত হন তা নয়। যাঁরা ধূমপায়ীদের সংস্পর্শে রয়েছেন তাঁদেরও জীবনে নেমে আসে মারণ রোগের বিপর্যয়। ধূমপানের (Smoking)প্রভাবে শরীরের প্রায় সব অঙ্গই সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়ে। তবে ফুসফুস এবং হৃদযন্ত্রে বেশি প্রভাব ফেলে| মূল কথাটি হ’ল কোনও তামাকজাত পণ্যই (Tobacco Day 2020) নিরাপদ নয়|
মারণ রোগের আতুড় ঘর হল তামাক। বিশ্বব্যাপী তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার রোধ করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু এর তৎপরতায় ১৯৮৭ সাল থেকে প্রতি বছর ৩১শে মে দিনটি “বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস” হিসেবে পালিত হয়ে থাকে| এই প্রসঙ্গে হু-র মত, তামাকের (Tobacco Day 2020) ব্যবহারিক ক্ষতির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্যই বিশ্বব্যাপী এই প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও মাত্র ২০৩০ সালের মধ্যে মাত্র ১২ শতাংশ দেশের এক-তৃতীয়াংশ তামাক বর্জনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে রয়েছে| আরও পড়ুন-Robot Journalist: করোনাভাইারাসের থাবায় সাংবাদিক ছাঁটাই, রোবট জার্নালিস্ট নিয়োগ করল এই সংবাদ মাধ্যম
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চাইছে এই ১৯৪টি সদস্য দেশগুলি যেন নিজ উদ্যোগে তামাক নিয়ন্ত্রণে কঠোর পক্ষেপ নেয়। ভারতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ধুমপায়ীদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য Cigarette and other Tobacco products (COTP 2003) নামে একটি আইন তৈরি হয়েছে| তামাকজাত পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ কমানোর এবং লোকজনকে তামাকের (Tobacco Day 2020) ব্যবহার ছাড়ানোর লক্ষ্যে ২০০৭-০৮ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রক নয়া পদক্ষেপ নেয়।
সে বছর চালু হল জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রাম।(NTCP)। এছাড়াও কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয় Crop Diversification programme(CDP)শুরু করল। ২০১৫-১৬ সালে দেশে তামাক চাষে রাশ টানা হল। তামাক চাষিরা যাতে বিকল্প চাষের মাধ্যমে উপার্জনের পথ করে নেয়, তারও উদ্যোগ নিল মন্ত্রক। আরও পড়ুন-Sonajharia Minz: ঝাড়খণ্ডের সোনাঝরিয়া মিনজ এখন স্বাধীন ভারতের প্রথম আদিবাসী মহিলা উপাচার্য
একারণেই ভারত সরকার দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা মন্ত্রকের সহযোগিতায়, বিড়ি ব্যবসায়ীদের বিকল্প কাজের বন্দোবস্ত করল। এই কাজে অগ্রগতি আনতে ‘দক্ষতা বিকাশ’ কার্যক্রমও শুরু হয়েছে| এরপর থেকেই বিভিন্ন জনসচেতনতা মূলক কর্মসূচির কারণে দেশে তামাকের (Tobacco Day 2020) ব্যবহারের প্রবণতা ৩৪.৬ শতাংশ থেকে ২.৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে| মহামারী করোনাকে রুখতে দেশজুড়ে চলছে পঞ্চম দফার লকডাউন। আসুন এই সময়েই মারণ রোগকে রুখে দিতে সবাই মিলে তামাক বর্জনে অঙ্গীকার করি।