Sonajharia Minz

Sonajharia Minz: ঝাড়খণ্ডের সোনাঝরিয়া মিনজ এখন স্বাধীন ভারতের প্রথম আদিবাসী মহিলা উপাচার্য

ভারতে এই প্রথম ঝাড়খণ্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হলেন আদিবাসী (Adivasi) মহিলা শিক্ষাবিদ সোনাঝরিয়া মিনজ Sonajharia Minz। জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপিকা সোনাঝরিয়া মিনজ এখন ঝাড়খণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। বৃহস্পতিবারই দায়িত্বভার গ্রহণ করতে দিল্লি থেকে ঝাড়খণ্ডে ফিরেছেন অধ্যাপক সোনাঝরিয়া মিনজ prof. sonajharia minz। আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধি হওয়ায় তাঁকে বার বার একটা কথা শুনতে হয়েছে যে তিনি কিছু করতে পারবেন না। তাঁর দ্বারা কিছুই হবে না। উক্তি এসেছে শিক্ষকদের তরফে।



সেই সব তাচ্ছিল্য থেকেই নিজেকে শক্তি জুগিয়েছেন সোনাঝরিয়া মিনজ (Sonajharia Minz)। অনগর্ল ইংরেজি বলতে না পারাটা কম দক্ষতার কিছু নয়। তা প্রামণ করাই ছিল সোনঝরিয়ার লক্ষ্য। তিনি করে দেখিয়েছেন। ঘরের মেয়ে সোনাঝরিয়ার এই কৃতিত্বে খুশি গোটা রাজ্য। হার না মানা মনোভাব তাঁকে জীবনের এই পর্বে পৌঁছে দিয়েছে। গতকাল ঝাড়খণ্ডে পৌঁছেছেন সোনাঝরিয়া মিনজ।

এমনিতে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল পদে রয়েছেন আদিবাসী (Adivasi) মহিলা দৌপদী মুর্মু। তিনিই সোনাঝরিয়া মিনজকে (Sonajharia Minz) সিধো কানহু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ করেন। সোনাঝরিয়া মিনজের (Sonajharia Minz) বাবা লুথেরান বিশপ এমেরিটাস নির্মল মিনজ। তিনি রাঁচির গসনার কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি আদিবাসী সমাজের ভাষাশিক্ষক ছিলেন। ওরাওঁ উপজাতির (Adivasi) কুদুখ সম্প্রদায়ের ভাষার উন্নয়নে অবদান রাখায় ২০১৬ সালে ভাষা সম্মানও জয় করেন তিনি। আরও পড়ুন-বিমান দুর্ঘটনাতেই নেতাজির মৃ্ত্যু হয়েছে, বিশ্বাস করতেন কৃষ্ণা বসু


Sonajharia Minz-এর শিক্ষা পরিচিত

১   ঝাড়খণ্ডের মেয়ে সোনাঝরিয়া  মিনজ রাঁচিতেই পড়াশোনার প্রাথমিক পাঠ নেন।

২   স্কুলের শেষ পরীক্ষায় যোগ্যতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে চলে যান চেন্নাই।

Sonajharia Minz
সোনাঝরিয়া মিনজ(Photo Credits: Social Media)

৩   সেখানকার মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজে স্নাতক পর্ব শেষ করেন সোনাঝরিয়া মিনজ।

৪   তার পরে গণিতে এমএসসি করেন সেখানেই।

৫  এর পরে সোনাঝরিয়া মিনজ (Sonajharia Minz) কম্পিউটার সায়েন্স এমফিল ও পিএইচডি করেন নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

৬  তার পরে  রাজধানীর সেই বিশ্ববিদ্যালয়েই ২৮ বছর কম্পিউটার সায়েন্সে অধ্যাপনাও করেন সোনাঝরিয়া মিনজ (Sonajharia Minz)।



উপজাতি (Adivasi) অধ্যুষিত ভারত যে সোনার ভারত তা কখনওই আর্যাবর্ত মেনে নেয়নি। তাই দেশ যত এগিয়েছে জঙ্গল কেটে যত নগরায়ন হয়েছে, উপজাতিরা  (Adivasi) ততই আরও ঘন জঙ্গলে চলে গিয়েছে। অধিকার ছাড়তে ছাড়তে তারা এখন লুপ্তপ্রায়। তবে তারমধ্যেও মাঝে মাঝে স্ফুলিঙ্গ জাগিয়ে রাখেন নির্মল মিনজ, দ্রৌপদী মুর্মু, সোনাঝরিয়া মিনজ-(Sonajharia Minz) এর মতো আগুনের শিখারা। মানুষ যখন চাঁদে পৌঁছে গেল, মহাকাশে সিনেমার শুটিংয়ে ব্যস্ত তখন কেন ভীল, সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুণ্ডারা মুখ লুকিয়ে থাকবে।



সমস্ত সুখের ভাগিদারদের কাছে কেন তারা বারবার শুধু  অপমানিত, অসম্মানিত হবে। দয়ার দানে বাঁচার দিন তো শেষ হয়েছে। এখন তো করে দেখানোর সময়।মেধা, দক্ষতা ও জেদের বশে সোনাঝরিয়া মিনজ (Sonajharia Minz) দেখিয়ে দেন ঝাড়খণ্ডও পারে। তাঁর জেদের জন্যই আজ দেশের খনিজ সম্পদে ভরপুর রাজ্য ঝাড়খণ্ড ভারতের প্রথম আদিবাসী  (Adivasi) মহিলা উপাচার্য এনে দিল। আরও পড়ুন-একটা বৃষ্টি দিন ও ভাল-বাসার নবনীতা



বস্তুত, আদিবাসী (Adivasi) সমাজের মহিলারা গোটা দেশজুড়ে কোনও কিছুতেই পিছিয়ে নেই। খেলাধুলোয় তো বটেই, রেডিও জকি হিসেবেও সুনাম অর্জন করেছেন বাংলার শিখা মান্ডি। বিমানও চালাচ্ছেন ওড়িশার লক্ষ্মীপ্রিয়া। প্রশাসনিক গুরুভার সামলাচ্ছেন ঝাড়খণ্ডের দ্রৌপদী মুর্মু। সেখানে আরও একটি পালক যোগ হল সোনাঝরিয়া মিনজের (Sonajharia Minz) কৃতিত্বে। ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল দ্রৌপদী মুর্মু এদিন তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য পদে নতুন নিয়োগ করেন। বাকি দুই জন অর্থাৎ অধ্যাপক রাম লক্ষণ সিং নীলাম্বর পীতাম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য নিযুক্ত হলেন। একই সঙ্গে বিনোবাভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে বসলেন মুকুল নারায়ণ দেও।



অধুনা বিহারে লালুপ্রসাদ যাদব যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সেই সময় ১৯৯২ সালে সিধো কানহো বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়। অধ্যাপক সোনাঝরিয়া মিনজ (Sonajharia Minz) এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তাঁর এই পদে আসীন হওয়া ভারতের পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের (Adivasi) পড়ুয়াদের কাছে অনেক বড় অনুপ্রেরণার ভূমিকা নেবে। ইতিমধ্যেই এই নয়া নিয়োগ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কমেন্টের ঝড়। নেটিজেনরা অধ্যাপক সোনাঝরিয়া মিনজকে (Sonajharia Minz) শুভেচ্ছাবার্তায় ভরিয়ে দিচ্ছে।

Facebook Comments Box

Post Author: bongmag

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।