Nabaneeta DebSen

“রোগ তো শরীরের হয়েছে, আমি আনন্দে আছি”

১৯৯৬ সালে ক্লাস এইট, তখন থেকে নবনীতা দেবসেনের লেখার সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয়। তাঁর কবিতার বই ‘প্রথম প্রত্যয়’-এর কিছুটা পড়া। সেই ‘প্রথম প্রত্যয়’ ২০১৭-তে ৫০বছর ছুঁয়ে ফেলল। পড়ার তালিকায় খুব কম প্রচলিত একাঙ্ক নাটকও রয়েছে। সাহিত্যের একক অঙ্গনে নবনীতাকে বর্ণনা করা যায় না। তাঁর একহাত ধরে আছে বাল্মীকির রামায়ণ আর অন্যহাতে সংবাদ প্রতিদিনের রোববার। এই বিস্তৃতিকে মাপতে গেলে তাঁকে জানতে হবে। ভাল-বাসার বারান্দায় নবনীতার মতো সাবলীল ছন্দ সাহিত্যপ্রেমী বাঙালির পরম পাওয়া বলতে পারেন। নবনীতা যেন লক্ষবুটির বেনারসি। নিপুণ বুনটের সঙ্গে এক নরম উজ্জ্বলতা, যা পাঠককে ঋদ্ধ করবে, আলোকিত করবে, সূক্ষ ভাবনার কদর করতে শেখাবে। চোখে ধাঁধা লাগাবে না। Bongmag.com-এর জন্য সেই নবনীতা দেবসেনকে নিয়ে কলম ধরলেন তাঁর পরম ভক্ত পিনাকী গুহ।

Nabaneeta Debsen

একটা বৃষ্টি দিন ও ভাল-বাসার নবনীতা

এই এক ছত্র যে কবে থেকে আমার মননকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিয়েছে, মনে পড়ে না। শান্তিনিকেতন আমার আবাল্য সখা। জন্ম থেকেই আপাত শান্ত গ্রাম্য জনপদ যেন পিছু টানে। আসলে লাল মাটির দেশে জন্ম তো, গুরুদেব যে শুধু আদর্শগত নয়, জন্মগত ভাবেই আমার আত্মজন, অভিভাবক। তাইতো পুতুলবাটি নিয়ে খেলার সময়েই বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে পরিচয়। আর রবির দেশেই নবনীতা দেবসেনের লেখনির সঙ্গে আমার পরিচয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কোনও জোড়ালো নারীবাদের পরিচয় না দিয়েও যিনি মহিলাদের স্বতন্ত্র উপস্থিতির নজির রাখতে পারেন, তিনিই নবনীতা দেবসেন। কি সহজ সুন্দর শব্দ চয়ন, কোনও দ্বিধা ছাড়াই যেন একই সঙ্গে স্কলারের পড়ার টেবিল থেকে আঁচলে হলুদের দাগ লেগে থাকা গৃহিনীর বইয়ের তাকে স্বচ্ছন্দে বিচরণ করেন। প্রিয় কবি সাহিত্যিকদের ঘিরে অনুরাগী পাঠককুলের একটা ভিড় সবসময় চোখে পড়ে। কিন্তু নবনীতা দেবসেনের পাঠকগুলো যেন তাঁর স্বজন, তাইতো বাড়ির বাইরে পা দিয়ে তিনি কোথাও বেড়াতে যাবেন, দেখবেন বিমানবন্দর থেকে রেল স্টেশন একটা ভিড় তাঁকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছে।