বসন্ত মানেই প্রেমের যাপন। আর এই প্রেম তো শুধু দুটি মানুষের মধ্যে হতে পারে না। সময় বিশেষে প্রেমের ধরণ বদলায়। আমার প্রিয় দক্ষিণের জানলা যেমন, দাদুর বাড়িতে বেড়াতে গেলেই মনে হত প্রেমিকার কাছে চলেছি। আমার সবটুকু ভালবাসা দখল করেছিল ওই জানলা। ফাগুন এলেই কৃষ্ণচুড়া একেবারে সেজেগুজে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসত। জানলার বাইরেই তার অবস্থান। বাগানের গাছাগাছালির মাঝে একেবারে লাল টুকটুকে রাঙাবউ। এ-তো প্রেম। মায়ের প্রতি সন্তানের ভালবাসা বিশ্বজনীন। মা-মানেই আঁচলে হলুদের দাগ, মা মানেই ভরসার কোল। যেখানে মাথা রাখলে দুঃখও বলে, তোকে ছুটি দিলাম। মা আবার দেশের মাটিও। যার টানে নির্ভাবনায় জীবন দিতে তৈরি হয়ে যা বিপ্লবী ছেলেরা। মায়ের শিকল বাঁধা পা দেখতে কেই বা চায় বলুন। সেই মায়ের জন্মদিনেই গানে কথায় বৈঠকী আড্ডা। আরও পড়ুন-ফেলে আসা মেয়েবেলা ও মন কেমনের বসন্ত উৎসব
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি অবন মহলে বসছে এই বৈঠকী আড্ডা। যার পোশাকি নাম বিশ্ববীণারবে। নব রবি কিরণ নিবেদিত এই সুরেলা সন্ধ্যায় আপনার সঙ্গে আড্ডা দিতে উপস্থিত থাকবেন রেডিও মির্চির উপস্থাপিকা শ্রী। এছাড়াও থাকছেন সৈকত শেখরেশ্বর, অ্যারিনা ও শীর্ষ। এমন জমাটি আড্ডার পরিকল্পনা ও পরিচালনার নেপথ্যে রয়েছেন অরিজিৎ মিত্র। মূলত অরিজিৎবাবুই এই অনুষ্ঠানের প্রাণপুরুষ। তাঁর মা ভারতী রায়ের জবন্মদিন উপলক্ষেই হচ্ছে কথায় গানে বৈঠকী আড্ডা। অরিজিৎ রায় নবনালন্দা স্কুলের অধ্যক্ষ। ভারতীদেবী এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাত্রী। আর মায়ের জন্মদিনেই শহর কলকাতাকে সুরেলা সন্ধ্যা উপহার অরিজিৎ মিত্রের। আরও পড়ুন-ক্যানভাসে বৃষ্টির রাত, প্রহর জাগে ১৪ ফেব্রুয়ারি
এই জন্মদিন উদযাপনে নবনালন্দার পড়ুয়াদের ভূমিকাও রয়েছে। তবে তা ২২ ফেব্রুয়ারিতে নয়। পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাল্মীকিপ্রতিভা নাটক মঞ্চস্থ করবে, পড়ুয়ারা। ফিরে আসি বিশ্ববীণারবে প্রসঙ্গ। একঘণ্টার এই মননশীল আড্ডাতে থাকছে, পুরনো দিনের গান, রবীন্দ্র সংগীত, নজরুলগীতি, রাগ প্রধান গান এমনকী প্রচলিত আধুনিক গানও। ১৬টি গানের সঙ্গেই চলবে বৈঠকী আড্ডা। যেহেতু মায়ের জন্মদিন মুখ্য, তাই মা থাকছেন প্রথম পর্বে। ব্যক্তি মায়ের গণ্ডী ছাড়িয়ে সর্বজনীন মা। দেশ মাতৃকাও বটে। গানে কথায় এগিয়ে যাবে অনুষ্ঠান। বাতাসে এখন প্রেমের উঁকিঝুঁকি, সবেমাত্র গিয়েছে ভ্যালেন্টাইন্স ডে। এই নান্দনিক সন্ধ্যায় প্রেমের অবকাশ থেকেই যাচ্ছে। সুরের মূর্চ্ছনায় প্রতিভাত প্রেম। বসন্ত তো প্রেমেরই প্রতীক, আর ফাগুন আসবে রবিঠাকুর থাকবেন না, তাতো হতেই পারে না। বৈঠকী আড্ডায় থাকছে বসন্ত বন্দনা। ভাষাও তো মা, যে মাকে মুক্তির স্বাদ দিতে এক ঝাঁক বাঙালি যুবক হাসতে হাসতে মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছিলেন। ২২ ফেব্রুয়ারির আনন্দ সন্ধ্যার একেবারে শেষভাগে থাকছে বাংলা ভাষা। গানে কথায় রইল আমন্ত্রণ।