বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেও বারে বারে ভেস্তে যায়। আসলে দিনকাল তো খুব একটা সুবিধার নয়, বাড়ি ফাঁকা রেখে যাওয়ার সাহসই হয় না। কিন্তু তাই বলে তো অনন্তকাল বাড়ির দেখভালের দায়িত্ব নিয়ে বসে থাকতে পারেন না। কাউকে তখন অনুরোধ করতে হয় বাড়িতে থাকার। সেটাও বড় ঝামেলার। তবে এবার থেকে এসব আর ভাবতে হবে না। নিশ্চিন্তে পাহাড়ে, জঙ্গলে অথবা বিচে বসে ছুটি কাটান। বাড়ি আপনার ভাল থাকবে। আগলে রাখবে এই স্মার্ট গ্যাজেটরা। চলুন এদের কীর্তিকলাপ একটু দেখে নিই।
প্রথমেই আসে স্মার্ট ডোর লকের কথা। বাড়ির সদর দরজায় এই স্কোলেজ এনকোড বসিয়ে নিন। এই ডোর লক ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত মনে রাখতে পারে। এবার পছন্দমতো পাসওয়ার্ড দিয়ে বাড়ির দরজাকে সুরক্ষিত করুন। যদি পোষ্যকে বাড়িতে রাখার চিন্তাভাবনা থাকে তাহলেও এই লক লাগাতে পারেন। বন্ধুকে বলে যাবেন, তিনি সকাল বিকেল সময় করে এসে পাসওয়ার্ড দিয়ে স্মার্ট ডোর লক খুলে আপনার পোষ্যকে ও বাড়িটিকে দেখে যাবে। একেবারে ওয়াইফাই ব্লুটুথ সেটিংসের ব্যবস্থা রয়েছে। বিচে বসে সমুদ্রের সফেন হাতছানির মাঝেই কে দরজার সামনে এল বেশ বুঝতে পারবেন, চিন্তা দূর হবে।
আউটডোর স্মার্ট সিকিওরিটি ক্যামেরাটিও বেশ চমৎকার। বেড়াতে যাওয়ার সময় একেবারে চিন্তামুক্ত হয়ে যান। যাওয়ার আগে সদর দরজার বাইরে ঝুলুক, আউটডোর স্মার্ট সিকিওরিটি ক্যামেরা। এই ক্যামেরায় সেন্সর লাগানো আছে। তাই মানুষ পোষ্য সবাইকেই আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারে। বাড়ির সামনে কে এসে দাঁড়াল, কতক্ষণ থাকল, কীভাবে বাড়ির দিকে তাকাচ্ছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ আপনাকে দেবে। একেবারে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ভিডিও। একদম সাতদিন টানা নজর রাখবে, হ্যাং করার ঝামেলাই নেই। বাড়ি ফিরে স্টোর ভিডিও চেক করে সমস্তটাই নজরে রাখতে পারবেন।
ইনডোর স্মার্ট সিকিওরিটি ক্যামেরাও ভীষণ প্রয়োজনীয়। প্রিয়তমাকে নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন। বাড়ির বাইরে স্মার্ট ডোর লক বসালেন, স্মার্ট ক্যামেরা ঝোলালেন। আর বাড়ির ভিতরটা আপনার অনুপস্থিতিতে কেমন আছে জানতে মন চাইবে না? চাইবে তো নিশ্চই, পছন্দের লিভিং রুম, বেডরুম, সাধের ব্যালকনি, এসব দেখভালের জন্য অনবদ্য এই ইনডোর সিকিওরিটি ক্যামেরা। গুগল নেস্টের ক্যামেরাটি কিনে শুধু ফোনে অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিন। দেখবেন হাজার মাইল দূর থেকে ঘরের ভিতরে কী চলছে তা দেখতে পাচ্ছেন। শুধু দিনের বেলাতেই নয়, এই ইনডোর স্মার্ট সিকিওরিটি ক্যামেরার চোখ রাতেও জলে। আর ছবি? দিনের সঙ্গে কোনওভাবেই আলাদা করতে পারবেন না। আরও পড়ুন-শুধুমাত্র কাছের মানুষকে প্রিয় মুহূর্ত শেয়ারের সুযোগ দিচ্ছে ইনস্টাগ্রাম, জানেন কীভাবে?
এতো গেল ক্যামেরার কথা, পাঁচ পাঁচটা দিন বাড়িতে থাকব না। ঘরে কেউ বাতি দেবে না? তাকি করে হয়, পাশের বাড়ির পঞ্চুকে বলবেন বারান্দার আলো জ্বালিয়ে দিতে, নাহলে গৃহস্থের বাড়ি ভর সন্ধেয় যে অন্ধকারে থাকে। ওই যা, পঞ্চু তো পেট পাতলা সবাইকে বলে দেবে। চোরের কাছেও খবর পৌঁছাতে সময় লাগবে না। এসব দিন চলে গেছে মশাই। কোনও পঞ্চুকে দরকার নেই হাতের কাছে এসেছে বেস্ট স্মার্ট বালব এবং বেস্ট স্মার্ট সুইচ। আগে তো লোকজনকে বাইরে যাওয়ার খবর দেবেন না বলে একেবারে এক সপ্তাহের জন্য আলো জ্বালিয়ে চলে যেতেন। বিলও উঠত বিনা কারণে। এবার আপনাকে কিছুই করতে হবে না। বেস্ট স্মার্ট বালব ও বেস্ট স্মার্ট সুইচ দুজন দুজনের কাজ একা একাই করে নেবে। আপনি শুধু ঘড়ি দেখে একবার ফ্লিপ করবেন। বাড়িতে জ্বলে উঠবে আলো। আবার সময়ে নিভেও যাবে। আলো জ্বলছে, সময়ে নিভেও যাচ্ছে। তার মানে বাড়িতে লোক আছে, দুপা এগিয়েও চার পা পিছিয়ে পালাবে চোর। আরও পড়ুন- গরমকে ছক্কা হাঁকাতে বাজারে এল এসি শার্ট, এক চার্জেই ফুরফুরে ঠান্ডা
বাড়িতে রাখুন বেস্ট স্মার্ট প্লাগ। বেড়াতে যাওয়ার আগে শুধু আলো নেভানো ও জ্বালানোর সময় স্কেডিউল করে দিন। ব্যাস আর ভাবতে হবে না, সন্ধে ছটা বাজলেই আপনার লিভিং রুমের আলোটা জ্বলে উঠবে। রাত ১১ টায় নিয়ম করে বন্ধ হয়ে যাবে। আপনার হয়ে সেকাজ করে দেবে বেস্ট স্মার্ট প্লাগ।
ঘরের ভিতরে বিধি ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু আপনি বেড়াতে যাচ্ছেন বলে জনে জনে তো আর ডেকে বার্তা দেওয়া যায় না। আপনার অবর্তমানে এমন কেউ বাড়িতে এলে তাঁর খেয়াল রাখবে বেস্ট স্মার্ট ডোরবেল। গুগল নেস্টের হ্যালো স্মার্ট ওয়াইফাই ভিডিও ডোরবেল। এই ঘণ্টি আপনাকে সেরা আওয়াজ ও ছবি দেখার সুবিধা দেবে। পরিচিত মুখ হলে ডোরবেল আপনাকে জানিয়ে দেবে দরজার ওপারে কে আছে। এককথায় ফেসিয়াল রিকগনিশনের সুবিধা যাকে বলে আর কি। পার্সেল ডেলিভারির নোটিফিকেশন দেবে। বাড়ির বাইরে বসে এতসব খবর পাবেন। সত্যি সত্যি দূরে থাকার চিন্তাটা বেমালুম চলে যাবে।
আচ্ছা চোর না হয় ঢুকতে পারবে না। ভয়ে বাড়ির ধারেকাছেও ঘেঁষবে না। কিন্তু যদি রান্নাঘরের জলের পাইপটা ফেটে যায়, বা বাথরুমে! তখন কী হবে? দূর এত ভাবছেন কেন, মনের মতো গ্যাজেট তো হাতের কাছেই রয়েছে। বেস্ট স্মার্ট ওয়াটার লিক ডিটেক্টর। একবার শুধু এএ ব্যাটারি লাগিয়ে এই লিক ডিটেক্টরকে ফিট করে ফেলুন। টানা তিনবছর পরিষেবা দেবে। আর পাইপ ফেটে বিপত্তিতে পড়ার সম্ভাবনা নেই।
জল থেক বাঁচালেন, তবে আগুন ধরার ভয়ও ভুলে যান। সঙ্গে রয়েছে স্মার্ট স্মোক অ্যান্ড কার্বন মনোক্সাইড ডিটেক্টর। আপনি বাড়িতে নেই, এমন সময় কোনও কারণে আগুন ধরে গেল। আপনার ফোনে নোটি ফিকেশন চলে যাবে। সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন। শুধু বেড়াতে যাওয়ার আগে বাড়ির বেস্ট স্মার্ট স্মোক অ্যান্ড কার্বন মনোক্সাইড ডিটেক্টরটি ঠিকভাবে লাগানো আছে কি না তা পরীক্ষা করে নিন। এমন বন্ধুর মতো স্মার্ট গ্যাজেট থাকতে আর কী চিন্তা।