সারমেয়র ভালবাসা নিয়ে তো কোনওরকম সন্দেহের অবকাশ নেই। সারমেয় প্রেম যেমন মারাত্মক, তেমন মানুষের প্রতি সারমেয়র ভালবাসাও অপরিমিত। যত কষ্টই হোক সে তার কাছের মানুষদের রক্ষা করবে। একইভাবে কষ্টটাই বড় কথা নয়, সারমেয়র ধর্মই হচ্ছে অন্যকে সহযোগিতা করা, রক্ষা করা। শত আঘাত সহ্য করেও সারমেয় নিজের ব্রত থেকে সরে আসে না। এমনই ঘটনা ঘটেছে ইংল্যান্ডের সাসেক্সে। সেখানে রয়েছে ম্যাগি নামের বছর পাঁচেকের একটি মিষ্টি সারমেয়। আজ শুনব তারই যন্ত্রণাদীর্ণ কাহিনী।
ম্যাগিকে দেখলে বুঝবেন যুদ্ধ ঠিক কীভাবে ক্ষতের জন্ম দেয়। ম্যাগির দুটো চোখেই লেগেছে গুলি। ডান কানটাও গুলিতে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। চোয়াল ভেঙেছে, একটি দুটি নয় ১৭টি গুলি খেয়েছে সে। তারপরেও সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শুধু দাঁড়িয়েই নেই থেরাপির মাধ্যমে অসহায় পিছিয়ে পড়া মানুষের সেবা করে চলেছে সে। গতবছর একটি অ্যানিম্যাল চ্যারিটি সংস্থা লেবানন থেকে ম্যাগিকে উদ্ধার করে ইংল্যান্ডে নিয়ে আসে। যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবাননে অসহায় সারমেয়দের সেবা করতেই গিয়েছিল সংস্থাটি। সেখানেই একটি বাক্সের মধ্যে থেকে গুরুতর জখম ম্যাগিকে সংস্থার কর্মীরা দেখতে পান। তার গোটা শরীরে ১৭টি বুলেটের ক্ষত ছিল। তারপরেও বাঁচার চেষ্টা করে যাচ্ছিল ছোট্টো ম্যাগি। এরপরেই ইংল্যান্ডে নিয়ে আসা হয় তাকে। সেখানে নিশ্চিন্তের আশ্রয় হিসেবে একটি পরিবারও পায়। তারপর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, সেখানে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসে ম্যাগি। কিন্তু চোখ কান চোয়াল নেই বলেই ম্যাগি ফুরিয়ে গিয়েছে এমন ভাবার কোনও কারণ কিন্তু নেই। ম্যাগি ফুরোয়নি বরং নতুন উদ্যমে জেগে উঠেছে।
তাকে থেরাপির ক্লাসে ভর্তি করে দেওয়া হয়। পালিকা মা কাসে এই কাজ করেন। খুব শিগগির ডগ থেরাপিতে কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করে ম্যাগি। এরপর নিজেই মানুষকে খুশি রাখার কাজ করছে সে, এখন তার একটি শক্তপোক্ত ডেজিগনেশন হয়েছে, তাকে বলা হচ্ছে থেরাপি ডগ। তার কাজই হল ব্যস্ত, দুর্বিনীত, হতাশাগ্রস্ত, অসুস্থ মানুষকে খুশি রাখা। ভালভাবেই নিজের কাজে সফল ম্যাগি। সবমিলিয়ে বেজায় খুশি ম্যাগির পালিকা মা কাসে।