কৈশোরের প্রেম ডেকে আনল বিপদ, সন্তানসম্ভবা কিশোরী মা হল। কিন্তু বিষয়টি লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতে সদ্যোজাতকেই মাটি চাপা দিল সে। এদিকে রাস্তার পাশে আচমকা মাটির ঢিপি দেখেই সন্দেহ হয় পাড়ার পরিচিত প্রিয় কুকুর পিংপঙের। সে মাটি খুঁড়তে শুরু করে। তার তিনপায়ের বদান্যতায় অল্পক্ষণের মধ্যেই আলগা হয়ে পড়ে মাটির ঢিপি। সেখান থেকে কচি দুখানা হাত বেরোতেই তারস্বরে ডাকতে শুরু করে পিংপং। সাত সকালে পিংপঙের গলায় এমন অস্বাভাবিক ডাক শুনেই ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তারপর মাটি সরিয়ে উদ্ধার হয় সদ্যোজাত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা তড়িঘড়ি সেই বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটেন। তখনও একরত্তির হৃদযন্ত্র খানা ধীরে ধীরে ধুকপুক করছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে থাইল্যান্ডের এক গ্রামে। এতক্ষণে হাসপাতালের নার্সদের নিরন্তর সেবায় সদ্যোজাত সুস্থ হয়ে উঠেছে। খবরটি চাউর হতেই পিংপঙের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলে। স্বাভাবিকভাবেই পোষ্যর কৃতিত্বে গর্বিত প্রভু। কালো কুচকুচে পিংপং-কে নিয়ে মালিক উষা নিসাইখার গর্বের সীমা নেই। তিনি বলেন, পোষ্য হিসেবে পিংপঙের কোনও তুলনাই চলে না। ভদ্র সভ্য, কখনওই তাঁকে বিরক্ত করে না। প্রতিবেশীরাও পিংপঙের সহযোগিতা পায় সবসময়। বছর খানেক আগে এক পথদুর্ঘটনায় একটি পা নষ্ট হয়ে যায় ওই সারমেয়র, তবে তারপরেও উপকার করার প্রকৃতি বদলে যায়নি। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়েই মানুষের কাজ করে সে। প্রভুও সারমেয়কে যত্নেই রেখেছেন। এই যে বড়সড় অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আগেই নবজাতকের প্রাণ বাঁচাল পিংপং, এটা তো তার কাছে নতুন কোনও কাজ নয়। সে সুযোগ পেলেই সাধ্যের মধ্যে উপকার করতে কখনওই পিছপা হয় না।
এদিকে যে কিশোরী মা লোকলজ্জার ভয়ে নিজের সন্তানকে মাটি চাপা দিয়েছিল, পিংপঙের খবর ছড়াতেই সে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমাও চেয়েছে সে। শিশুটি এখন হাসপাতালে আছে, বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কিশোরী মা যদি চায় তাহলে সন্তানকে ফিরে পেতে পারে, নাহলে কোনও চাইল্ড হোমে নিজের পরিজনকে খুঁজে নেবে ওই সদ্যোজাত।