জগৎমাতা জগদ্ধাত্রী এখন চন্দননগরের অঙ্গনে, আলোর মালায় সেজে তাঁকে অভ্যর্থনা করতে তৈরি গঙ্গার পাড়ের একদা এই ফরাসী কলোনি। আজ রবিবার সপ্তমী, স্নান খাওয়া সেরে একটু বিশ্রাম নিয়েই বেরিয়ে পড়া যাবে। গতকাল শনিবার ষষ্ঠী ছিল, এদিন থেকেই শহরজুড়ে প্রতিমা দর্শনে উপচে পড়েছে ভিড়। রবিবার ছট পুজো থাকায় রাজ্য সরকার সোমবার ছুটি ঘোষণা করেছে। তাই আরও একটি দিন হাতে পাওয়া গেলে মনে হয় পড়ে পাওয়া ১৪ আনা। এখন শুধু এই ১৪ আনার সদ্ব্যবহার করাটাই জরুরি। কিন্তু বাইরে থেকে আসছেন যখন, তখন তো কীভাবে এই দুদিনে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর পরিক্রমা সম্ভব হবে তার তো একটা প্রাথমিক খসড়া প্রয়োজন। bongmag.com আপনাকে সেই পথের দিশাই দেখাতে চলেছে। মহাষষ্ঠীর সকাল থেকে উৎসবের জনজোয়ার, আলোকোজ্জ্বল শহরে আজ থেকেই পা পড়েছে অসংখ্য মানুষে। তবে একদিনে চন্দননগরের পুজো পরিক্রমা সম্ভব নয়। আলোর রোশনাইয়ে জগদ্ধাত্রীকে দেখতে রাতটা বেছে নিন, এই সময় সারারাত জাগে চন্দননগর।
শুরুটা করুন মানকুণ্ডু স্টেশনে নেমে, স্টেশন রোড ধরে সোজা জ্যোতির মোড়। পথেই দেখে নিন মানকুণ্ডু স্পোর্টিং ক্লাব, নতুন পাড়া, নিয়োগী বাগান, বালক সংঘ, সার্কাস মাঠ, চারা বাগানের পুজো, গোপালবাগ, তেমাথার বিশাল প্রতিমা| সেখান থেকে জিটি রোড ধরে এগিয়ে যান ভদ্রেশ্বরের দিকে। দেখে ফেলুন ছুতোর পাড়া, অরবিন্দ সংঘ, বারাসত ব্যানার্জি পাড়া, বারাসত চক্রবর্তী পাড়া, বারাসত গেট, তেঁতুলতলার প্রতিমা। আবার জ্যোতির মোড়ের দিকে ফিরে শিবমন্দিরের পুজো দেখে গোন্দলপাড়ার দিকে যান। সেখানকার উল্লেখযোগ্য পুজোগুলি হল চারমন্দির তলা, অম্বিকা অ্যাথলেটিক্স, এ সি চ্যাটার্জি লেন, মনসাতলা, সাতঘাট, মরান রোড, নতুন তেলিঘাট। এবার স্ট্র্যান্ড রোডের দিকে সোজা এসে দৈবকপাড়া, নোনাটোলা, বড়বাজারের প্রতিমা দর্শন করে নিতে পারেন। তবে হাঁটা ছাড়া দ্বিতীয় কোনও বিকল্প নেই। কেননা ভিড়ের মাঝে এসব রাস্তায় গাড়ি-ঘোড়া পাবেন না বলেই ধরে রাখুন। আরও পড়ুন-ইতিহাসের মুহূর্ত ছুঁয়ে জগদ্ধাত্রী পুজোয় চন্দননগরের ইতিকথা
দ্বিতীয়দিনে চলে আসুন কলপুকুরের দিকে। বিদ্যালঙ্কার দেখে বাঁ-দিকে হাঁটলে পাবেন হেলাপুকুর ধার, পালপাড়া, সুরেরপুকুর, কাঁটাপুকুর, সন্তানসংঘ। হরিদ্রাডাঙা দেখে পৌঁছে যান চন্দননগরের উত্তর প্রান্তে। এবার জিটি রোড ধরে দক্ষিণের দিকে এগোলেই একের পরে এক দেখতে পাবেন বোড়ো তালডাঙা, বোড়ো চাঁপাতলা, বোড়ো দিঘির ধার, বোড়ো কালীতলা সরিষাপাড়া। এরপর বড়বাজার এবং বাগবাজারের প্রাচীন পুজো দেখে চন্দননগরের স্টেশন রোডের দিকে এগিয়ে আসুন। মধ্যাঞ্চল, ফটকগোড়া, মধ্যাঞ্চল, খলিসানির পুজো সেখানেই পড়বে। এবার চন্দননগর স্টেশনের দিকে চলে আসুন কলুপুকুরে। পশ্চিম দিকে কলপুকুরধার, শীতলাতলা, বউবাজার, সুভাষপল্লির পুজো দেখে নিন। লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারের দিকে যেতে পারলে চাউলপট্টিতে আদি মা এবং কাপড়ের পট্টিতে মেজো মা দেখতে ভুলবেন না। মোটামুটি নামকরা সব পুজোই অল্প সময়ে এভাবেই ঘুরে নিন। বং ম্যাগ’কে সঙ্গে নিয়ে ভাল কাটুক আপনার উৎসবের দিনগুলি।
ছবি সৌজন্য: সিঞ্চন চ্যাটার্জী, কালনা
বেসোহাটার বনেদি বাড়ির প্রতিমা, চন্দননগর