শরৎকালের আকাশ দেখতে পেলে খুশিতে মনটা ভরে ওঠে না, এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুস্কর। শরৎ এল মানেই কাশের দোলায় মন ভুলিয়ে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ভাসিয়ে সে আসবে। আরে তাকে তো চেনোই, আমাদের দুগ্গা মা। বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে আশ্বিনের শারদ প্রাতে শোনার পর আর কাজকর্মে মন বসে না। মনে হয় সবকিছুতে তালা ঝুলিয়ে এখন শুধু মনের সুখে ঘুরে বেড়াই। ছেলেমেয়েকে সঙ্গে করে উমা এল বলে। কলকাতার দুর্গাপুজো তো বহুকাল হল মহোৎসবের আকার নিয়েছে। আর গঙ্গা পাড়ের একদা ফরাসী কলোনি চন্দননগরে? মা দুগ্গা সেই নগরে খুশির বার্তা বয়ে আনলেও আলোর বার্তার জন্য জগদ্ধাত্রীর পথ চেয়েই চন্দননগরের দিন কাটে।
ট্যাগ সন্ধি পূজা
ইতিহাসের মুহূর্ত ছুঁয়ে জগদ্ধাত্রী পুজোয় চন্দননগরের ইতিকথা
চন্দননগর নামটা শুনলেই দুটো তিনটে জিনিস প্রথমেই মনে আসে, এক ফরাসী কলোনি, দুই জগদ্ধাত্রী পুজো, তিন আলোকসজ্জা। জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্য সুবিখ্যাত হুগলি জেলার গঙ্গার পাড়ের এই শহর। তবে বিখ্যাত হওয়ার পিছনেও রয়েছে একটা লম্বা চওড়া ইতিহাস। একবার সেই ইতিহাসের অঙ্গনে চোখ রাখি। লোকমুখে প্রচারিত আছে যে ফরাসী সরকারের দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী এই পুজোর প্রবর্তক| এ কথা বহুল প্রচলিত যে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র আর ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর মধ্যে সখ্যতা ছিল| এক বার কৃষ্ণচন্দ্রের বাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো দেখে পরের বছর ইন্দ্রনারায়ণ চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ চালপট্টির নিচুপট্টিতে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করেন, এটিও চন্দননগরের আদি পুজো বলে পরিচিত| এখনও পর্যন্ত পুরুষানুক্রমে দেওয়ান চৌধুরীদের উত্তরপুরুষের নামে এই পুজোর সংকল্প হয়| তাই অনেকেই মনে করেন, ইন্দ্রনারায়ণের মাধ্যমে কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজো চন্দননগরে প্রবেশ করেছিল|