Poem

কবিতার খাতা

Poem
kolkata

সম্পর্ক

সমস্ত নীল যত্ন করে চাপা দিলেও

অন্ধকার ঘরে ছায়ার প্রেতাত্মা ওড়ে

 

আড়ালের এক মস্ত সুযোগ,

দূরের জিনিস ঠাহর হয় না নাগাল না পেলে

 

সুতোয় কেটেছে  হাতের কর

বেহায়ার মতো জমে থাকা আঠেরোটি ঘর জ্বলে জ্বলে অসহ্য জ্বলে

 

ভৌতিক কালিও গাঢ় হয়, তুমি জানোই না

বিষ বায়ু কীভাবে মাথায় চড়ে গেলো

 

ভোর হলে সেইতো আবার

নিয়ম করে ছুঁয়ে ফেলা

 

সাতবাসি ত্বক,  নিমের দাঁতন, আলো…

নিজের পাশে নিজেকে গুছিয়ে নেওয়া ছাড়া

আর কীইবা সম্বল বলো!

 

Arunima

অরুণিমা চৌধুরী



প্রাণের শহর

কবেকার পরিচিত মুখ তুমি, সেই কলকাতা৷

আমার দেখা স্বপ্নের কলকাতা৷

জন্মেছি তোমার বুকে

বড় হয়েছি একটু দূরে৷

বুকের মাঝে আছো তুমি কলকাতা৷

 

কত না বলা কথার সাক্ষী তুমি কলকাতা৷

কত অব্যক্ত যন্ত্রণার অংশীদার তুমি কলকাতা৷

তিল তিল করে গড়ে উঠে হয়েছো তিলোত্তমা৷

আমি বলি,

তিল তিল করে সয়ে তুমি হয়েছো সর্বংসহা৷

 

স্বপ্ননগরী বাসবদত্তা তুমি৷

বিনিদ্র রজনীর রজনীগন্ধা তুমি৷

নিয়নের আলোয় ক্যানভাসে মোড়া তুমি মোহময়ী৷

শত দোষে দুষ্ট হয়েও তুমি কালজয়ী৷

সত্যজিৎ, মৃণালের কলকাতা হয়েও তুমি শক্তি, সুনীলের কলকাতা৷

উথালপাথাল রাজনীতির

রক্তাক্ত আঙিনাতেও তুমি স্বয়ংসম্পূর্ণা৷

বুকের ঠিক মাঝখানটিতে আছো কলকাতা৷

 

আমার কলকাতা, শহর কলকাতা

সবার তুমি কলকাতা৷

পরকে করেছ আপন, বিদেশিকে বানিয়েছো স্বদেশি৷

ভালবাসার অন্য নাম তুমি কলকাতা৷

যতবার গেছি দূরে-

অনুভব করেছি তোমায় প্রতি পলে পলে৷

পড়ন্ত বিকেলের নস্টালজিক জলছবি তুমি,

কবির কল্পনার জ্বলন্ত প্রেমিকা তুমি কলকাতা৷

শৈশব, কৈশোর, যৌবন হয়ে

বার্ধক্যের আশ্রয়স্থল তুমি কলকাতা৷

 

‘মানছি না’-‘মানব না’-র মিছিল নগরী তুমি৷

আস্তাকুঁড়ে, ফুটপাথবাসীর স্বর্গীয় বাসস্থান তুমি৷

নীচ, হীন, পতিতার উন্মুক্ত মরুদ্যান তুমি৷

তবুও তুমি নিশ্চল, অবিচল সংস্কৃতির ধারক ও বাহক

আপন গতিতে প্রবাহমান

সত্যনিষ্ঠার পীঠস্থান তুমি৷

 

তোমার বিজয়রথের চাকা থাকুক অপ্রতিরোধ্য৷

তোমার উড্ডীয়মান

ধ্বজা হোক গগনচুম্বী৷

কলকাতা-

তুমি থেকো কলকাতাতেই৷

তুলিকা নাথ

শারদীয়া

Info@bongmag.com

সাইকেল খারাপ হওয়াতে যেতে পারেনি

তিন মাসের মাইনে কেটেছে

আকাশ সকাল থেকে লিক

বসে আছে ন্যাংটো গাছের ছায়ায়

ছেলে মেয়ে এদিক ওদিক

 

শিকনি নাকে ভরে এসেছে শরৎ

ঠনঠনে হাঁড়িতে মরদের বাঁধা মদ

দুদিন হল ফেরেনি বাড়িতে

খোঁজ নেই

 

রেললাইনের ধারে কাশফুল, হাড়গোড়

তিরিশ টাকায় নিয়ে বুকের ওপর

শায়ার দড়ি আলগা করে

দূর্গা অসুরের কানে কানে বলে —

 

‘এবার পুজো নাকি ছোট করে হবে!

একটু দেকো না বাবু,

পেসাদে টান এলে এত পেট চলে?’

জয়াশিস ঘোষ

 

মৃত্যুদূত

Alone Man

অস্ফুট কান্না, মর্গে থাকা মৃতদেহের গন্ধে ম ম করছে চারদিক।

আজও ঘরে ফেরেনি কারও বাবা, কারও স্বামী, কারও ছেলে-

উৎসব চলছে, তবু জীবন চলছে জীবনের মতোই।

সেই কবে শুরু হয়েছে মৃত্যুমিছিল, শুধু লাশের ভিড়!

সেই স্বপ্নের সকাল, স্বাভাবিক জনজীবন ফিরবে কবে জানা নেই!

পকেটে চাপ পড়ছে, চাপ বাড়ছে মনের, অনাথ তুমি আমিও।

মহাকালের কড়াল থাবা, সভ্যতার অভিশাপ, সবাই আজ একা-

মৃত্যু চলছে, বাড়ছে সংক্রমণ, মেঘের আড়ালে মৃত্যুদূত ওঁৎ পেতে বসে।

হয়তো আমাকেও ফিরতে হবে, সব ফেলে রেখে, না ফেরার দেশে।

অনেক কাজ বাকি, ফ্যাকাসে স্মৃতিতে তামাটে কিছু মুখ,

আমি আসছি, দাঁড়াও কিছুক্ষণ, ওহে মৃত্যুদূত।

সুরজিৎ দত্ত

ঝড় যে ওঠে

 

স্বপ্ন যত জোড়া জোড়া,

আঁধার কালো মেঘে,

বাতাস কেবল হুমড়ে পড়ে

ঝড়ের সাথে জীবন যে ঢলে-

ঝড় যে ওঠে, ঝড় যে ওঠে।।

 

অনেক অনেক কথা বলতে ইচ্ছে করে

হৃদয়ের রক্ত দিয়ে বন্ধুত্বের উপন্যাস লিখতে ইচ্ছে করে,

ঝড় যে ওঠে, ঝড় যে ওঠে।

 

নীরবতার গভীরে ফেলে আসা অতীত গুলো

গুমরে গুমরে মরে।

এমনটা যদি হতো –

টাইম মেশিনে চড়ে সময়ের বুক চিরে

বন্ধু তোমার কাছে যেতাম চলে।

তবু আজো ঝড় ওঠে।

 

ভেবেছিলাম তোমায় আমি রাখব বেঁধে

সারাজীবন।

যে যতই ঝড় উঠুক।

নিজেই তুমি ছিড়লে বাঁধন

করলে আমায় পর।

যে ঝড়ে আমাদের ছিড়ল বাঁধন

সে যেন তোমায় ভাল রাখুক।।

Samarjit Sarkar Roy Mahajan

সমরজিৎ সরকার রায় মহাজন

Post Author: bongmag

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।