Kazi Nazrul Islam

Kazi Nazrul Islam: ‘শত কবিতায় নজরুল’, বিদ্রোহী কবিকে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রদ্ধার্ঘ্য

অস্থিরতা যেন আমাদের নিত্যসঙ্গী৷ দেশ কাল ভেদে যার চরিত্র তেমন কিছুই বদলায়নি৷ এমনিতেই আগ্রাসী মনোভাবের করাল ছায়া ক্রমশ পৃথিবীকে গ্রাস করে চলেছে৷  মৃত্যু, হত্যায় বুক কাঁপলেও মানুষ আজ প্রতিবাদের ভাষা হারিয়েছে৷ তারউপরে  তীব্র অসুখে জর্জরিত গোটা পৃথিবী৷ এতকিছুর মধ্যে ক্ষমতাসীনের দম্ভের রাশ আলগা হয়নি, বরং হিংস্র হয়ে তা দিকে দিকে ত্রাসের সঞ্চার করেছে৷ এই অস্থির সময়ে আমাদের মনে আশার আলো জাগায় সেই একমেবদ্বিতীয়ম কাজী নজরুল ইসলাম (Kazi Nazrul Islam) ও তাঁর প্রতিবাদী  চেতনা৷  অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে যাঁর হৃদয় কখনও কাঁপেনি৷  সেই দুখুমিঞাকে আজ আমাদের বড়ই প্রয়োজন৷ আর আজই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫-তম তিরোধান দিবস৷



নজরুলের (Kazi Nazrul Islam) কলমকে বড়ই ভয় পেত ইংরেজ শাসক৷ যেকোনও উপায়ে তাঁকে গরাদবন্দি করতে পারলেই যেন স্বস্তি মেলে৷ বন্দিজীবনেও বাঙালির মুখে প্রতিবাদের ভাষা জোগাতে বারবার তাঁকে কলম ধরতে হয়েছে৷  তাঁর একেকটি কালজয়ী সৃষ্টি আজও অন্তরের অন্তস্থলকে আন্দোলিত করে৷ বাংলাদেশের জা

অস্থিরতা যেন আমাদের নিত্যসঙ্গী৷ দেশ কাল ভেদে যার চরিত্র তেমন কিছুই বদলায়নি৷ এমনিতেই আগ্রাসী মনোভাবের করাল ছায়া ক্রমশ পৃথিবীকে গ্রাস করে চলেছে৷  মৃত্যু, হত্যায় বুক কাঁপলেও মানুষ আজ প্রতিবাদের ভাষা হারিয়েছে৷ তারউপরে  তীব্র অসুখে জর্জরিত গোটা পৃথিবী৷ এতকিছুর মধ্যে ক্ষমতাসীনের দম্ভের রাশ আলগা হয়নি, বরং হিংস্র হয়ে তা দিকে দিকে ত্রাসের সঞ্চার করেছে৷ এই অস্থির সময়ে আমাদের মনে আশার আলো জাগায় সেই একমেবদ্বিতীয়ম কাজী নজরুল ইসলাম (Kazi Nazrul Islam) ও তাঁর প্রতিবাদী  চেতনা৷  অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে যাঁর হৃদয় কখনও কাঁপেনি৷  সেই দুখুমিঞাকে আজ আমাদের বড়ই প্রয়োজন৷ আর আজই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫-তম তিরোধান দিবস৷ আরও পড়ুন-Kashmir: কাশ্মীর! এক বিভাজিত আখ্যান (দ্বিতীয় পর্ব)

নজরুলের (Kazi Nazrul Islam) কলমকে বড়ই ভয় পেত ইংরেজ শাসক৷ যেকোনও উপায়ে তাঁকে গরাদবন্দি করতে পারলেই যেন স্বস্তি মেলে৷ বন্দিজীবনেও বাঙালির মুখে প্রতিবাদের ভাষা জোগাতে বারবার তাঁকে কলম ধরতে হয়েছে৷  তাঁর একেকটি কালজয়ী সৃষ্টি আজও অন্তরের অন্তস্থলকে আন্দোলিত করে৷ বাংলাদেশের জাতীয় কবি ছিলেন তিনি৷ বাংলাদেশের জন্মের ৫০ বছর চলছে৷ একই সঙ্গে কবির “বিদ্রোহী” কবিতার ১০০ বছর৷  হ্যাঁ, শতবর্ষ পাড়ি দিয়েও যার চলা চিরন্তন হয়েছে৷ “বিদ্রোহী” আমাদের শোষকের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হতে শেখায়৷ শোষিতের তকমা ঝেরে ফেলে বিদ্রোহী হতে শেখায়৷   সবকিছুর নেপথ্যে বরাভয় মুদ্রায় সাহস জুগিয়ে যান নজরুল___ “বল বীর- বল উন্নত মম শির!”



এমন দিনে এক উল্লেখযোগ্য কাজ করে নজরুলপ্রেমীদের মনের মণিকোঠায় চিরস্থায়ী জায়গা করে নিল রাজ্যের তরুণতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়৷ বয়সে নবীন হলেও কর্মযজ্ঞ কিন্তু প্রশংসার দাবি রাখে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্র, নজরুল সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিজ সেই কাজে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে৷ বাংলাদেশের সঙ্গে সংযোগ রেখে বিদ্রোহী কবিকে (Kazi Nazrul Islam) নিয়ে চলছে নিরন্তর গবেষণা৷ দিকপাল গবেষকরা কাজ করে চলেছেন৷  গত শনিবার অর্থাৎ ২৮ অগাস্টে কলকাতার প্রেস ক্লাবে গুণীজন সমাবেশে শুভ উদ্বোধন হল “শত কবিতায় নজরুল” বইখানি৷ আরও পড়ুন-Kashmir: কাশ্মীর! এক বিভাজিত আখ্যান (প্রথম পর্ব)

অধ্যাপিকা ও বিশিষ্ট নজরুল গবেষক সুমিতা চক্রবর্তী সম্পাদিত “শত কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম” বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ বললেও কম বলা হবে৷ নজরুলের ৮০টি কবিতা ও ২০টি গান নিয়ে তৈরি এই ৩৮০ পৃষ্টার বই “শত কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম”৷ বইটির  প্রচ্ছদ থেকে শুরু করে প্রতিটি পাতায় চোখ বোলালেই সুমিতা চক্রবর্তীর নিরলস পরিশ্রমের ছবিটা চোখের সামনে ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠবে৷  বইটির উদ্বোধনে এসে তাই সম্পাদিকাকে সনির্বন্ধ ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান৷  তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, অন্নদাশংকর রায়ের কবিতা, ক্ষমতাসীনের বোঝাপড়ায় বাংলা ভাগ হলেও নজরুল (Kazi Nazrul Islam) অবিভক্তই থেকে গেছেন৷



আর প্রাণের কবিই এই দুঃসময়ে দুই বাংলাকে, বলাবাহুল্য দুটি দেশকে জুড়ে রেখেছেন৷ এই সেতুবন্ধনকে আমাদের দৃঢ় করতে হবে৷ এক্ষেত্রে বড় আশ্রয় হতে পারে বিদ্রোহী কবির কবিতা ও গান৷  যা শতাব্দী পেরিয়েও আবাল বৃদ্ধ বণিতার রক্তে প্রতিবাদের বীজমন্ত্র বপণ করে৷ নজরুলের “বিদ্রোহী” কবিতা আজ ভারতের ১০০টি ভাষায় অনুবাদ হতে চলেছে৷  অনুষ্ঠানে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী জানালেন, “শত কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম” বইখানিও ভারত-সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের ভাষায় অনুবাদ হবে৷ আরও পড়ুন-Shankha Ghosh:“আমার বলে রইল শুধু, বুকের ভিতর মস্ত ধু ধু”

দেশ কাল ভেদে যে প্রতিবাদের অর্থ বদল হয় না, ভাষা সেখানে যে অন্তরায় নয়, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন কবি সুবোধ সরকার৷ পেরু, চিলির, মতো লাতিন আমেরিকান দেশগুলির বিপ্লবের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেছে নজরুলের (Kazi Nazrul Islam) কবিতা৷ এটাই বিদ্রোহী কবির সার্থকতা৷ কবি পুত্রবধূ, কল্যাণী কাজী মনে করিয়ে দেন, “জয় হোক, শান্তির জয় হোক, সত্যের জয় হোক, সাম্যের জয় হোক৷” নিদারুণ দুঃসময়ে এযেন জীবনের চিরন্তন বাণী৷  “শত কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম”-এই মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের শুরুতেই  বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডক্টর দেবজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে “আমার নয়নে নয়ন রাখি…”-র সুর  শহরের কোলাহল থেকে মনকে অনেক দূরে ভাসিয়ে নিয়ে যায়৷



সামগ্রিকতা, সমানাধিকারে বিশ্বাসী কবি (Kazi Nazrul Islam) তাইতো দরাজ কণ্ঠে বলতে পারেন, “বাংলা বাঙালির হোক, বাংলার জয় হোক৷ বাঙালির জয় হোক৷” অনুষ্ঠানের একদম শেষে কবি সুবোধ সরকারের কণ্ঠে “গাহি সাম্যের গান….” যেন অন্ধকারের আগল খুলে আলোর পথের শক্তি হয়ে ওঠে৷

 

Facebook Comments Box

Post Author: bongmag

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।