কোভ্যাকসিন, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন (COVID-19 Vaccine) তৈরি করল ভারত বায়োটেক নামের হায়দরাবাদের একটি সংস্থা। এই জুলাইতেই শুরু হচ্ছে মানব শরীরে কোভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ। বিশ্বের কাছে এখন অপ্রতিরোধ্য বিপর্যয়ের নাম করোনাভাইরাস। ২০১৯-এর ডিসেম্বর থেকে যা একটু একটু করে মানব সম্পদকে গ্রাস করে চলেছে। বিভিন্ন দেশের তাবড় তাবড় চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এখনও এই মারণ ভাইরাসকে কাবু করবে, এমন কোনও নির্ভরযোগ্য ভ্যাকসিন তৈরি করে উঠতে পারেননি। তাই বলে গবেষণা থমকে গিয়েছে এমনটাও নয়।
মার্কিন মুলুকের জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা নিজেদের মতো করে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন (COVID-19 Vaccine) তৈরির চেষ্টা করেছেন। প্রথমবারের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ ব্যর্থ হওয়ায় ফের নতুন উদ্যমে কাজ শুরু হয়েছে। ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরাও ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন। মানব শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগও চলছে। সম্ভবত সেপ্টেম্বরেই বাজারে আসছে সেই ভ্যাকসিন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও করোনার ভ্যাকসিন তৈরির বিষয়টিতে অক্সফোর্ডের উপরেই ভরসা রেখেছে বলে খবর। আরও পড়ুন-Robot Journalist: করোনাভাইারাসের থাবায় সাংবাদিক ছাঁটাই, রোবট জার্নালিস্ট নিয়োগ করল এই সংবাদ মাধ্যম
রাশিয়াতে করোনাভাইরাসকে রুখতে তৈরি হয়েছে অ্যাভিফ্যাভির ভ্যাকসিন। রেমডিস্যাভিরও প্রস্তুত হয়েছে। ইটালি ভ্যাকসিন তৈরির খবর জানিয়েছে। ইজরায়েলও ইতিমধ্যেই মহামারী কোভিডের ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলেছে বলে জানা গিয়েছে। এবার সেই তালিকায় নাম লিখে ফেলল ভারতও। হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক আইসিএমআর ও পুনের ভাইরোলজি ল্যাবের সহযোগিতায় তৈরি করে ফেলল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন (COVID-19 Vaccine) । যার নাম রাখা হয়েছে কোভ্যাকসিন। আরও পড়ুন-এই অধ্যাপক বাতিল প্লাস্টিক থেকে পেট্রোল তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছেন, কেন জানেন?
সমস্ত রকম পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হওয়ার পর মানব শরীরে কোভ্যাকসিনের (COVID-19 Vaccine) পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া। জুলাই মাসেই শুরু হচ্ছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। পুনের ভাইরোলজি ল্যাবে প্রথমে কোভিডের জীবাণু SARS-CoV-19 আইসোলেশনে রাখা হয়। ধীরে ধীরে সেই ভাইরাস দুর্বল হয়ে গেলে তারপর তাকে হায়দরাবাদের জেনোম ভ্যালিতে অবস্থিত ভারত বায়োটেকে পাঠানো হয়।
জানা গিয়েছে, গোটা দেশে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এমন বেশকিছু নাগরিকের শরীরে এই কোভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হবে। এক্ষেত্রে অল্পবয়সীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। কেননা কোভিডের সঙ্গে লড়ার মতো রোগ প্রতিরোধ শক্তি তাদের মধ্যে রয়েছে। করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগে সফলতা এলে চলতি বছরের শেষে তৃতীয় বারের জন্য পরীক্ষামূক প্রয়োগে অংশ হিসেবে দেশের অন্তত হাজার নাগরিকের শরীরে প্রবেশ করবে কোভ্যাকসিন। সেখানেই এই ভ্যাকসিনের (COVID-19 Vaccine) পূর্ণ কার্যকারিতা দেখা যাবে।
মানব শরীরে এই ভ্যাকসিনের কী কী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে তা দু’বারের পরীক্ষামূলক প্রয়োগেই স্পষ্ট হবে। করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন (COVID-19 Vaccine) তৈরিতে ভারতের প্রথম তুরুপের তাস হতে চলেছে এই কোভ্যাকসিন। অন্যদিকে বিশ্বের বড় বড় ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ততদিনে কোভিডের ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে। এরমধ্যে সবথেকে প্রতিশ্রুতিমান সংস্থা হল ইংল্যান্ডের অ্যাস্ট্রজেনেকা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোডেরনা থেরাপিউডেক্স। আরও পড়ুন-করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে চাঁদে যেতে চান? সুবর্ণ সুযোগ দিচ্ছে নাসা
মারণ ভাইরাস কোভিডের ভ্যাকসিন প্রকাশ্যে আনতে বিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ২০২০-র শেষ লগ্নকেই বেছে নিয়েছে। এদিকে আগামী আগস্ট মাসে মানব শরীরে প্রয়োগের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পারলেই করোনাভাইরাস রোধে বিশ্বের প্রথম ভ্যাকসিন সরবরাহকারী সংস্থার তালিকার শীর্ষে চলে আসবে ইংল্যান্ডের অ্যাস্ট্রজেনেকা। একবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত অনুমোদন মিলে গেলেই গণহারে ভ্যাকসিন (COVID-19 Vaccine) তৈরিও শুরু করবে সংস্থাটি।