Santiniketan

Rabindranath Tagore: ১৩৪৮-এর ১লা বৈশাখ, অসুস্থ শরীরে নিজের শেষ জন্মদিনের উৎসবে এলেন রবীন্দ্রনাথ

সেবারের জন্মোৎসবে গুরুদেব Rabindranath Tagore উত্তরায়ণের উত্তরদিকে প্রতিষ্ঠা করলেন পঞ্চবটী, সেটাই ছিল “বৃক্ষরোপণ” অনুষ্ঠানের সুচনা যা আজও অব্যাহত। তবে বৈশাখের বদলে তা গুরুদেবের তিরোধান দিবস বাইশে শ্রাবণে। রবীন্দ্রনাথ শেষ জন্মদিনে রচনা করলেন জন্মদিনের গান। হে নূতন দেখা দিক আর-বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ।

Santiniketan

শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের প্রথম জন্মদিন পালিত হয় ১১০ বছর আগে

[…]

Upasana Griho

২৫ বৈশাখ ও স্মৃতির মোড়কে শান্তিনিকেতন

আমরা সবাই জানি শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্র জন্মোৎসব পয়লা বৈশাখ পালিত হত তারপর গরমের ছুটি পড়ত। পরে নিয়মের পরিবর্তন আসে। ২০০৭-এ এই পবিত্র দিনেই আমার জীবনের প্রথম বিদেশযাত্রা। সকালে সাতটায় মন্দির। পৌঁছাতে দেরি হয়ে যাওয়ায় ধমক খেয়েছিলাম। মন্দিরের দাঁড়িতে ছিলেন বুলবুলদি (বুলবুল বসু)। বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ থেকে রবীন্দ্রনাথের একটি দুষ্প্রাপ্য আলোকচিত্র ও পাণ্ডুলিপির একটি পাতার প্রতিলিপি নিয়ে “২৫ বৈশাখ” নামে সুদৃশ্য কার্ড ছাপা হত। এছাড়াও পয়লা বৈশাখ, ৭ই পৌষেও কিছু পাওয়া যেত।

Gurudev

“আজ প্রাতে আমার জন্মদিন উৎসব”

এক কিশোরীর হাতের থালায় একজোড়া ধুতি-চাদর, নিজের হাতে গাঁথা বকুল ফুলের মালা, বাজার থেকে কিনে আনা বেলফুলের মালার সাথে আরো কিছু ফুল। সেই কিশোরী উল্টোডিঙির বাগান বাড়ি থেকে নিঃশব্দে পার্কস্ট্রাটের বাড়িতে এসে প্রবেশ করল তার মামার ঘরে। তিনি তখনও ঘুমিয়ে। ফুল, মালা ও কাপড় সযত্নে মামার পায়ের কাছে রেখে কিশোরীটি প্রণাম করল। তারপর সেই অসামান্য রূপবান পুরুষকে মৃদুস্বরে ঘুম থেকে জাগিয়ে বলল, “আজ তোমার জন্মদিন’।

Rathindranath Tagore

“রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেন শান্তিনিকেতনের দুয়োরানি”

শান্তিনিকেতনে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেন এক ভাগ্যবিড়ম্বিত নাম। যাকে গড়তে গিয়ে গোটা জীবনটা ব্যয় করলেন, জীবন সায়াহ্নে এসে সেখানে তাঁর ঠাঁই হল না। দূর থেকে খবর নিতেন, গুরুদেবের জন্মজয়ন্তী কেমনভাবে পালিত হচ্ছে। কেমন আছে সাধের বিশ্বভারতী। আজও বছর ঘুরে সেই মানুষটার জন্মদিন আসে। নীরবে চলে যায়, আশ্রমে রথীঠাকুরের জন্মদিন নিয়ে কোনও অনুষ্ঠান হতে দেখিনি। মন্দির থাকলেও তাঁর জন্য একটা বাক্য সেখানে খরচ হয় না। সেই রথীঠাকুরকে নিয়েই bongmag.com এর আলপাচারিতায় বিশ্বভারতীর অবসরপ্রাপ্ত চিত্রগ্রাহক সমীরণ নন্দী।

UPASANA GRIHO

“তিনিই মেলান, এমন প্রকৃতির পাঠশালা কোথায় পাবে শান্তিনিকেতন ছাড়া?”

শান্তিনিকেতন যেন একটা আত্মা যার মধ্যে আমি মিশে গিয়েছি। জীবনের ১৮টা বছর আসনাসোলে কাটিয়েছি। আর বাকি ১৭টা বছর শান্তিনিকেতনে। সমানই তো প্রায়, তাই না! মাঝে মাঝে যখন আশ্রমের মধ্যে হাঁটতে থাকি তখন মনে হয় আমি এখানকারই। তখন মন একটা দোটানার মাঝে থাকে। বোধহয় কোনও এক সময় ছিলাম, হয়তো বা ছিলাম না। সে স্মৃতি আর নেই। কিন্তু আজ শান্তিনিকেতনের একজন হয়ে গেছি।

Bsanta Utsab

স্বস্তিকাদি গাইছেন “নিবিড় অমা তিমির হতে বাহির হল”, গৌর প্রাঙ্গণের আকাশে তখন মেঘ সরে চাঁদ উঠছে__ এভাবেই আমার বসন্তকে দেখা

১৭ বছর আগে তিনি পড়তে এসেছিলেন শান্তিনিকেতনে। তার আগে টিভিতে এখানকার বসন্ত উৎসব দেখা। পড়ার প্রথাগত পাঠ ফুরোলেও গুরুদেবের মাটির টানে থেকে গিয়েছেন। দেখতে দেখতে ১৭টা বসন্ত কাটছে, এই মায়ার টান ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়ার কথা ভাবতেই পারেন না, তিনি সংগীতভবনের প্রাক্তনী গৌরব চৌধুরী। শান্তিনিকেতনের পড়ুয়াদের প্রিয় বন্ধু, দাদা, ভাই। দাদা দিদিদের প্রিয় ছাত্র। bongmag.com-এর সঙ্গে ভাগ করে নিলেন তাঁর পরম পাওয়া বসন্তকে।

Basanta Utsab

‘দোল পূর্ণিমার আলো মেখে হাসছে আশ্রম মাঠ, নাচে গানে জমে উঠেছে আড্ডা’__ ফিরে দেখা বসন্ত উৎসব

বসন্ত এলেই তিনি স্মৃতিতে বাঁচেন, ঘণ্টা তলা, সেঁজুতি, গৌর প্রাঙ্গণ, আশ্রম মাঠের সেই আড্ডা। বাড়ির বারান্দা দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই দেখতে পান গোলা থাতার মতো চাঁদটা তাঁকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সেই ছোটবেলার মতো। আশ্রম মাঠে চল আড্ডা হবে। তিনি শান্তিনিকতনের ব্রহ্মচর্যাশ্রমের গুরু ক্ষিতিমোহন সেনের নাতনি সুদর্শনা সেন। bongmag.com- এর সঙ্গে ভাগ করে নিলেন বসন্ত উৎসবের স্মৃতি।

Basanta Utsab

‘রবীন্দ্রনাথ চাইতেন শান্তিনিকেতনকে ছড়িয়ে দিতে, পাড়ায় পাড়ায় বসন্ত উৎসব গড়ে উঠুক’

তাঁকে দেখলেই মনটা আলোয় ভরে ওঠে। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে অত্যন্ত সাবলীল। কখনও এগিয়ে গিয়ে কথা বলতে দ্বিধাবোধ হয়নি, তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ডক্টর সবুজকলি সেন। ছাত্রছাত্রীদের প্রিয় দিদি। বসন্ত উৎসবের অনুভূতি ভাগ করে নিলেন bongma.com- এর সঙ্গে।

Basanta Utsab

দোল এলেই ভয় হয়, উন্মত্ত জনতার ভিড়ে একলাটি শান্তিনিকেতন

দোল আসছে, এসবিআই-এর পিছনের মাঠে থোকা থোকা পলাশ। বিদ্যাভবনের পুরনো অফিসে যেতে যে রাধাচূড়া পথ আটকে দাঁড়ায় সে এখন হলুদ শাড়িতে উচ্ছল তরুণী। হাতি পুকুরে ধারেও তারের ফাঁকে পলাশকে দেখলাম। কেমন লাজুক মুখ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। দেখে একই সঙ্গে আনন্দ ও বেদনায় মনটা ভরে উঠল। উত্তুরে হাওয়া সবে পথ ভুলেছে, সন্ধ্যা হলেই বোলপুরে এখন দখিন হাওয়ার পাগলামি।  দোল আসতে তো আর বাকি নেই, গতবারের বসন্ত উৎসবের বেদনাদায়ক স্মৃতি এখনও টাটকা। আভাবনীয় ভিড়ের চাপে সেদিনের শান্তিনিকেতনকে দেখে মনে হচ্ছিল মেলার মাঝে ভরসার হাতটা ছিটকে গিয়েছে। দুচোখে ভয় আর অসহায়তা নিয়ে প্রিয়জনকে খুঁজে ফিরছে সে। বিশ্বভারতীতে এখন বসন্ত উৎসব হয় ঠিকই, তবে শান্তিনিকেতনের আত্মা তখন চুরি যায়।